তাঁর মায়াবী কন্ঠের জাদুতে বুঁদ গোটা দেশ। জগত জোড়া খ্যাতি, নাম-যশ কিছুই যেন ছুঁতে পারেনি অরিজিৎ সিং-কে। জিয়াগঞ্জের আদরের ‘সোমু’ হয়েই থাকতে চান তিনি। তাই তো মুম্বই নয়, বলিউডের এক নম্বর গায়কের ঠিকানা জিয়াগঞ্জ। নিজের এলাকার উন্নয়নের জন্য় একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন অরিজিৎ সিং। মেয়েদের ইংরাজি শিক্ষার ক্লাস, খেলার মাঠের সংস্করণ থেকে শুরু করে হাসপাতাল, বিদ্যালয় তৈরি, সবকিছুর নেপথ্যে রয়েছেন অরিজিৎ সিং। তাঁর এই মহৎ উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুধু অরিজিতকে বাহবা দিয়েই ক্ষান্ত থাকেননি মমতা। সবরকমভাবে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন শুরু থেকেই। বুধবার সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় মুখ্যমন্ত্রীর মুখে আবারও শোনা যায় অরিজিৎ-স্তুতি। মমতা বললেন, ‘অরিজিৎ খুব ভালো গান গায়। তাঁকে জঙ্গীপুরে জমি অ্যাপ্রুভ করে দিয়েছি। কারণ অনেক বড় স্কুল থেকে শুরু করে, আরও অনেক কিছু করছে। আমরা খুশি, আমরা তাঁকে আগাম অভিনন্দ জানাই।’
জানা গিয়েছে, অরিজিৎ সিং-এর উদ্যোগে তৈরি স্কুল ও হাসপাতাল তৈরির জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে যে জমির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তা রঘুনাথগঞ্জ থানার আওতায় পড়ে। জনবহুল সেই এলাকায় রয়েছে পাকা রাস্তা, চারপাশে বাজারঘাট। জানা যাচ্ছে, সদ্যই ওই জমির চারপাশে পাঁচিল তৈরি হয়েছে। খুব শীঘ্রই স্কুল তৈরির কাজ শুরু হবে। সূত্রের খবর, আপতত দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হবে ওই স্কুলে। জিয়াগঞ্জে মায়ের নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা তৈরি করেছেন, ওই সংস্থাকেই জমি দান করেছে রাজ্য। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, প্রয়াত মা, অদিতি সিং-এর নামেই স্কুলের নামকরণ করতে চলেছেন অরিজিৎ।
২০২১ সালের মে মাসে কোভিড আক্রান্ত হন অরিজিৎ সিং-এর মা। করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর জিয়াগঞ্জ থেকে প্রথমে বহরমপুর মাতৃসদনে ভর্তি ছিলেন গায়কের মা,পরবর্তীতে ঢাকুরিয়া আমরিতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কোভিড-মুক্ত হলেও শেষমেশ মাল্টি অর্গান ফেলিওরের জেরে মাত্র ৫৭ বছর বয়সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন অরিজিৎ-এর মা।
বাঙালি মা এবং পঞ্জাব বাবার সন্তান অরিজিৎ। জিয়াগঞ্জের বিজয় সিং স্কুলে লেখাপড়া করেছেন। এই মুহূর্তে এই স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি অরিজিৎ। নিজের ব্যস্ত কেরিয়ার সামলেও জিয়াগঞ্জের ভবিষ্যত প্রজন্মের বিকাশে নিঃশব্দে কাজ করে চলেছেন। স্কুলের খেলার মাঠের সংস্কার করেছেন, এলাকায় গড়েছেন ক্রীড়াকেন্দ্র। ক্রিকেট প্রশিক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
অরিজিতের বিশ্বাস, পরিপূর্ণ মানব মনের বিকাশের জন্য শিক্ষা,খেলাধূলার উপর জোর দিতে হবে। তাই সাবর অগোচড়েই মুর্শিদাবাদের উন্নয়নে একগুচ্ছ কাজ করে চলেছেন তিনি।