‘দত্তা’ হিসেবে বড়পর্দায় ধরা দিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। ১৬ জুন মুক্তি পেল সেই ছবি। এই ছবিতে কাজ করার প্রসঙ্গ থেকে বর্তমান সময়ের টলিউডের অভিনেতা, অন্যান্য একাধিক বিষয়ে কী কী ভাবেন সবটাই উঠে এল অভিনেত্রীর কথায়। আনন্দবাজারকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানালেন এই ছবির জন্য নাওয়া খাওয়া ভুলে একটানা ৬ ঘণ্টা প্রচার করেছেন।
‘দত্তা’ ছাড়া এখন কী কী কাজ করছেন অভিনেত্রী? ঋতুপর্ণা জানালেন মুম্বইতে তিনি কাজ করছেন। ইকাহরা সিঙ্গাপুর, আমেরিকা এবং বাংলাদেশেও কাজ চলছে তাঁর। এক সঙ্গে একাধিক ছবির কাজ এখন করছেন তিনি। ফলে চরম ব্যস্ততায় কাটছে তাঁর দিন।
‘দত্তা’ ছবিটি নিয়ে অভিনেত্রী হিসেবে কী মত তাঁর? অভিনেত্রীর কথায়, 'আমরা খুব একটা জটিল ছবি তৈরি করিনি। বাজেট খুব একটা ছিল না আমাদের। তবে ভীষণ যত্ন সহকারে বানানো হয়েছে এই ছবি। পোশাক পরিকল্পনা বলুন কিংবা শিল্প নির্দেশনা সবটা আন্তরিক ভাবে করা হয়েছে। প্রতিটা ছোটখাটো জিনিস সমান গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।'
এক সময় বাংলার নম্বর ১ হিরোইন সুচিত্রা সেনকে এই চরিত্রে দেখা গিয়েছিল। এবার এখন তাঁকে দেখা যাবে। নিজেকে তাঁর জায়গায় দেখে কতটা গর্বিত সেটা বারবার নিজের কথায় তুলে ধরেছেন ঋতুপর্ণা। কিন্তু মহানায়িকার কোন কাজ তাঁর সব থেকে বেশি পছন্দের? উত্তরে ঋতুপর্ণা বলেন, 'দ্বীপ জ্বেলে যাই এবং উত্তর ফাল্গুনী সব থেকে পছন্দের। এছাড়া হারানো সুর, সাত পাকে বাঁধা, আঁধী তো আছেই।'
কিন্তু অনেকেই তো তাঁকে ‘দত্তা’র চরিত্রে মানতে পারেনি। লুক নিয়ে কটাক্ষ চলেছে। সেই বিষয়ে কী বলতে চান তিনি? ঋতুপর্ণার এই বিষয়ে সাফ উত্তর, 'বিজয়া চরিত্রটি নাকি ১৮ বছরের ছিল। অনেকেই এমনটা বলছেন। তাই কাস্টিং নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কিন্তু সবসময় কী বয়সের কথা মাথায় রাখা যায়, বা সেই অনুযায়ী কাস্টিং করা যায়? শাহরুখ সলমন যে চরিত্রে অভিনয় করেন সব সময় তার সঙ্গে বয়স ম্যাচ করে কি?'
নিজে সকলকে সমান দেন, পরিচিতদের ছবি প্রচারে এগিয়ে আসেন। কিন্তু আজকালকার অনেক অভিনেতাকে ফোন করলে পর্যন্ত পাওয়া যায় না। তাঁদের আলাদা ম্যানেজার আছে। সেই বিষয়ে কী মত অভিনেত্রীর? উত্তরে পর্দার ‘দত্তা’ বলেন, 'নতুন প্রজন্মের এই ঔদ্ধত্য আমার ভালো লাগে না। ঔদ্ধত্য দিয়ে কিছু প্রমাণ করা যায় বলে আমি মানি না। আমার পরিবার আমায় এই শিক্ষায় বড় করেনি। ঔদ্ধত্য থাকা মানে চারিত্রিক গুণ থেকে সরে আসা। আজকাল সবাই সহজ ভাবে প্রচার পেতে চায়। আমাদের সময় আমাদের অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। এখনকার মতো কর্পোরেট ভাব ছিল না তখন। পারিশ্রমিক এত বেশি ছিল না। এসি ফ্লোর, ভ্যানিটি ভ্যান এসব তো ভাবনার বাইরে। শুক্রবার করে খালি কাগজে সাদা কালো বিজ্ঞাপন বেরোত আর পোস্টার। ফলে টিকে থাকার যে লড়াই সেটা বুঝি।'
আজকাল ঔদ্ধত্যের সঙ্গে কি আত্মকেন্দ্রিকতা বেশি দেখা যাচ্ছে ইন্ডাস্ট্রিতে? ঋতুপর্ণার উত্তর, 'মূল্যবোধ হারিয়ে যাচ্ছে। যোগাযোগ রাখে না কেউ। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি সবার পাশে থাকা উচিত। নিজে যতটা পারি থাকি। এটা আমার জীবনদর্শনের গুরুত্বপূর্ণ দিক একটা।'
নতুন প্রজন্মের জন্য তাঁর তাহলে কোনও বিশেষ টিপস? 'আসলে আমাদের সঙ্গে ওদের ভাবনার একটা তফাৎ তো আছেই। তবুও বলব দ্রুত সাফল্য পাওয়া যায় না। বাড়ি, গাড়ি, এগুলো কোনটা সাফল্যের মাপকাঠি নিন প্রতিভা এবং একাগ্রতা দুটো থাকা প্রয়োজন সফল হতে গেলে' মত অভিনেত্রীর।
আগামীতে অভিনেত্রীকে ‘সল্ট’, ‘গুডবাই মাউন্টেন’, ‘এ বিউটিফুল লাইফ’, ইত্যাদি ছবিতে দেখা যাবে।