দুর্নীতির দায়ে বিপাকে চিনের প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লি শাংফু ও তাঁর পূর্বসূরি ওয়েই ফেংহে। চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তাঁদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই বড় ধরনের পদক্ষেপ করেছেন। জিনপিংয়ের নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট পার্টি বৃহস্পতিবার সাবেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লি শাংফুকে দুর্নীতির অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার করেছে। শুধু তাই নয়, কমিউনিস্ট পার্টি তাঁর বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রমও শুরু করেছে। সবমিলিয়ে ভীষণ এখন সমস্যায় পড়েছেন শাংফু।
ঠিক কী অভিযোগ উঠেছে শাংফুর বিরুদ্ধে
বৃহস্পতিবার জানা গিয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলা ও আইনের চরম লঙ্ঘনের জন্য ৬৬ বছর বয়সী লি-কে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, চিনের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) নেতৃত্ব। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে এমনটাই। লি, যিনি পিপলস লিবারেশন আর্মির অত্যাবশ্যক রকেট (ক্ষেপণাস্ত্র) বাহিনীর প্রধান ছিলেন। শি নিজেই লিকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেছিলেন।
রয়টার্স গত বছর রিপোর্ট করেছিল যে লি সামরিক ক্রয়ের সন্দেহজনক দুর্নীতির জন্য তদন্তাধীন ছিল। দুই মাস নিখোঁজ থাকার পর গত অক্টোবরে কোনও ব্যাখ্যা ছাড়াই প্রতিরক্ষামন্ত্রীর পদ থেকে তাঁকে রহস্যজনকভাবে বরখাস্ত করা হয়। এই প্রথম চিন স্পষ্টভাবে নিশ্চিত করেছে যে লি তদন্তাধীন ছিলেন, সেই সঙ্গে প্রকাশ্যে আনা হয়েছে তাঁর অপরাধের বিবরণও।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে ৭১ বছর বয়সী শি, ক্ষমতায় আসার পর থেকে, লি সহ কয়েক ডজন পিএলএ জেনারেলকে হয় বরখাস্ত করা হয়েছে বা দুর্নীতির জন্য শাস্তি দেওয়া হয়েছে। সিএমসি-এর শৃঙ্খলা ও তত্ত্বাবধানকারী সংস্থা ২০২৩ সালের ৩১ অগস্ট, লির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছিল। তদন্তের ফলাফল অনুযায়ী, লি চরমভাবে রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা লঙ্ঘন করেছেন।
সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডও হতে পারে। কারণ, লির বিরুদ্ধে দলের প্রধান প্রচারণায় কারচুপি ও জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক পরিবেশ দূষিত করার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া প্রতিরক্ষামন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে ছেলেখেলারও অভিযোগ রয়েছে। উচ্চপদে অধিষ্ঠিত থাকাকালীন তিনি নিজের পদের অপব্যবহার করেছেন এবং অন্যের উপকার করতে ঘুষ নিয়েছেন বলেও দাবি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: (কাজ করতে গিয়ে কাটা পড়ল হাত, ভারতীয় শ্রমিককে রাস্তায় ফেলে দিলেন ইতালীয় মালিক! যন্ত্রণায় মৃত্যু)
এর আগে পার্টির শীর্ষ পদ স্টেট কাউন্সিলর হিসাবে, কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের সদস্য হিসেবেও কাজ করেছেন লি শাংফু। সিএমসি হল শির নেতৃত্বাধীন পিএলএর একটি হাইকমান্ড।
অন্যদিকে, একইভাবে ফেঁসে গিয়েছেন লির পূর্বসূরি ওয়েই ফেংহে। গত মার্চে পরিকল্পিত মন্ত্রিসভা রদবদলের সময় তাঁকে প্রতিস্থাপন করার পর থেকে জনসাধারণের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ওয়েই ২০১৫-১৭ থেকে কৌশলগত পিপলস লিবারেশন আর্মি রকেট ফোর্সের প্রধান ছিলেন। গত সেপ্টেম্বরে ওয়েইয়ের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া একটি তদন্তে পাওয়া গিয়েছে যে তিনিও বিশাল পরিমাণ অর্থ এবং মূল্যবান জিনিসপত্র ঘুষ নিয়ে, অন্যান্য কর্মীদের অনুপযুক্ত সুবিধা পেতে সহায়তা করেছিলেন। দেশের প্রতিরক্ষায় এর গুরুতর প্রভাব অস্বীকার করা যায় না।